মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৩

অবাধে চলছে ভুয়া চিকিৎসাবাণিজ্য

চিকিৎসার অপর নাম সেবা। আর সেবাই হচ্ছে ধর্ম। অথচ জীবনরক্ষাকারী এই সেবা নিয়ে প্রতারণার অন্ত নেই। স্বনামধন্য চিকিৎসক ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের বাইরে চিকিৎসার নামে যত্রতত্র ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠছে শত শত ভুয়া প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে সাইনবোর্ডসর্বস্ব হেকিম-ডাক্তারেরও অভাব নেই। সরকারিভাবে স্বীকৃত কোনো ডাক্তারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান থেকে পাস করার সনদ না থাকলেও তারা বড় ডাক্তার কিংবা বিশ্বখ্যাত হেকিম বনে গেছেন। সব রোগেরই চিকিৎসা আছে তাদের কাছে। হোক যত জটিল কিংবা দুরারোগ্য ব্যাধি।
বিস্তারিত

হারবাল চিকিৎসার নামে দেশব্যাপী অপচিকিৎসা প্রতারিত হচ্ছে বিশাল জনগোষ্ঠী

বাংলাদেশে ১৫ কোটি লোকের বাস। আর পাস করা ডাক্তার আছেন সাকুল্যে প্রায় চবি্বশ হাজার। দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮৫ ভাগের বসবাস গ্রামাঞ্চলে। কিন্তু পাশ করা ডাক্তারদের শতকরা ৯০ ভাগই বিভিন্ন ব্যক্তিগত, সামাজিক ও আর্থিক কারণে বসবাস করেন শহরে। গ্রাম এবং শহরে লোকসংখ্যা ও ডাক্তারের অনুপাতে আকাশ পাতাল তফাৎ থাকলেও উন্নত দেশের তুলনায় এবং চাহিদা অনুসারে এদেশে ডাক্তারের সংখ্যা নগন্য।
বিস্তারিত

পলাশবাড়ীতে হারবাল চিকিৎসার নামে প্রতারণা

পলাশবাড়ীতে হারবাল চিকিৎসার নামে তাদের এ বাণিজ্যের শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ। হারবালের দেওয়া এসব ভেজাল ওষুধে রোগমুক্তির বদলে উল্টো বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। জানা যায়, বিভিন্ন জটিল রোগের নাম করে ইউনানি, হারবাল, কবিরাজি, তদবির, দাওয়াখানা ইত্যাদি নানা পলাশবাড়ীতে চিকিৎসার নামে চলছে চরম প্রতারণা। এসব কথিত চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে রোগ নিরাময় দূরের কথা উল্টো রোগীরা নানারকম শারীরিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। যেখানে-সেখানে খোলা হয়েছে কথিত চিকিৎসা কেন্দ্র।
বিস্তারিত

ধুমছে চলছে ইউনানি, হারবাল কবিরাজি-দাওয়াখানার প্রতারণা

বিভিন্ন জটিল রোগের নাম করে ইউনানি, হারবাল, কবিরাজি, তদবির, দাওয়াখানা ইত্যাদি নানা স্টাইলে চিকিৎসার নামে চলছে চরম প্রতারণা। এসব কথিত চিকিৎসা কেন্দ্রে গিয়ে রোগ নিরাময় দূরের কথা উল্টো রোগীরা নানারকম শারীরিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই এসব প্রতারকের একচ্ছত্র বাণিজ্যিক দাপট। যেখানে-সেখানে খোলা হয়েছে কথিত চিকিৎসা কেন্দ্র। এগুলোর নেই কোনো স্বীকৃতি, নেই কোনো লাইসেন্স। অথচ এসব কেন্দ্রেই যৌনরোগ, পাইলস, অ্যাজমা, গ্যাস্টিক ও ক্যান্সারসহ জটিল, কঠিন বহুবিধ রোগ নিরাময়ের শতভাগ গ্যারান্টি দেওয়া হচ্ছে অহরহ।
বিস্তারিত

ইউনানী-হারবাল ও কবিরাজি দাওয়াখানা পুরোটাই প্রতারণা, হতাশাগ্রস্ত ও সহজ সরল মানুষ প্রতারিত

কক্সবাজার সহ জেলা প্রত্যন্তজনপদে ইউনানী, হারবাল ও কবিরাজি দাওয়াখানায় কথিত চিকিৎসার নামে চলছে চরম প্রতারণা । এসব দাওয়াখানায় চিকিৎসা নিয়ে রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া তো দুরের কথা উল্টো হাজার মানুষ শারীরিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। পুরো জেলায় এধরনের হারবাল চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছে কয়েক‘শ ব্যক্তি ও অর্ধশত প্রতিষ্ঠান। অনেকে ওষুধ প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে চিকিৎসা কাজ চালাচ্ছেন। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা চিকিৎসালয়ের সংখ্যা কত? ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া কতগুলো প্রতিষ্ঠান এ ধরনের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ?
বিস্তারিত

যশোরে কবিরাজি - হারবাল চিকিৎসার নামে প্রতারনার ফাঁদ

যশোরে হারবাল আর নানা প্রকার কবিরাজি চিকিৎসার নামে চলছে অনিয়ম ও প্রতারনা। সরকারি নিয়মনীতি লংঘন করে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে হারবাল প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অশ্লীল ভাষায় পত্রপত্রিকা, ডিশ চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার ও যেখানে সেখানে লিফলেট ছড়িয়ে ব্যবসা জোরদার করছে। এতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে পরিবার ও স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা।
বিস্তারিত

সোমবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৩

পুরুষদের যৌন দুর্বলতা সমস্যায় কি ঔষধের প্রয়োজন আছে? সাধারণ যৌন দুর্বলতার ঘরোয়া সমাধান

পুরুষদের যৌন দুর্বলতা সমস্যায় কি ঔষধের প্রয়োজন আছে? প্রায় ৭-৮ মাস আগে চট্টগ্রাম থেকে এক পেসেন্ট আমার ইংরেজি মাধ্যমের ব্লগ থেকে ইমেইল ঠিকানা সংগ্রহ করে আমাকে তার সমস্যার কথা জানায়। তারপর তাকে আমি আমার ফোন নম্বর দিলে তিনি ফোন করেন। বয়স ৪৩ বছর। ২টা ব্যবসা সামলাতে হয় ভদ্রলোককে। ৩ জন ছেলে মেয়ের বাবা। সব দিক মিলে বিশ্রাম নেয়ার সময় নেই বেচারার।

আপনিই বলুন এই যে আমাদের শরীরের শক্তির ক্ষয় হচ্ছে প্রতিদিন তার পরিপুর্ণতার জন্য আমরা সেই পরিমান পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করছি কি? স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের শরীর অবসন্ন হয়ে আসার কথা। যৌন শক্তি তো আপনার শরীরেরই একটা অংশ। সেটাতে তো বিঘ্ন ঘটা নিতান্ত স্বাভাবিক। তার জন্য আমাদের কি করা উচিত ?
পুরুষদের যৌন দুর্বলতা সমস্যায় কি ঔষধের প্রয়োজন আছে? সাধারণ যৌন দুর্বলতার ঘরোয়া সমাধান
যাই হোক তারপর আমি ভদ্রলোককে কিছু পরামর্শ দিলাম। যা সবার জন্যে কাজে আসবে। নিচে আমি সেগুলো উপস্থাপন করলাম। সাধারণ যৌন দুর্বলতায় কি করবেন -
  • সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন সকালে এক গ্লাস পানিতে ১ চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। 
  • সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ১টি করে ডিম খান। 
  • নিয়মিত দুধ (বিশেষ করে ছাগলের দুধ) খাওয়ার চেষ্টা করুন। 
  • নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন। 
  • রাতে অবশ্যই ৬-৭ ঘন্টা ঘুমান। 
নিয়ম গুলো অনুসরন করুন, ইনশা-আল্লাহ যৌন দুর্বলতা কেটে যাবে। অযথা ক্ষতিকর হারবাল, কবিরাজি বা এলোপাথিক High Potency উত্তেজক ঔষধ সেবন করে আপনার যৌন জীবন বিপর্যস্ত করে তুলবেন না।
জেনে নিন -
আর একটি বিষয় খেয়াল রাখবেন পেটে যেন গ্যাস না হয়। পেট যাতে পরিস্কার থাকে অর্থাৎ আপনার নিয়মিত পায়খানায় যেন কোন সমস্যা না হয় সে দিকে নজর রাখবেন। তারজন্য প্রতিদিন সকাল বেলায় এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ ইসব গুলের ভুসি মিশিয়ে পান করুন, এটি সমগ্র পৃথিবীতে সুপরিচিত। যেকোন পরামর্শের জন্য ২৪ ঘন্টাই আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন। ধন্যবাদ।
বিস্তারিত

দুর্দান্ত হস্তমৈথুন অভ্যাস দূরীকরণে হোমিওপ্যাথি

হস্তমৈথুন এমন একটি অভ্যাস যা একবার কাউকে পেয়ে বসলে ত্যাগ করা খুবই কষ্টকর হয়ে দাড়ায়। শুধু তাই না অভ্যাসটিই এক সময় অনেকের যৌন জীবন বিপর্যস্ত করে তুলে। যারা নিদারুন হস্তমৈথুন অভ্যাসে আসক্ত হয়ে পড়েছেন এবং ত্যাগ করার জন্য অপ্প্রান চেষ্টা করা সত্তেও ছাড়তে পারছেন না তাদের জন্য আমার আজকের লেখা।
বিস্তারিত

পেনিস বা পুরুষাঙ্গের গোঁড়া চিকন আগা মোটা বা বাঁকা সমস্যা

এ পর্যন্ত যত ফোন কল পেয়েছি তার মধ্যে প্রায় হাজার খানেক হবে যেখানে পেশেন্টরা একটা অভিযোগই আমায় করেছেন যে তাদের পেনিসের গোঁড়া চিকন আগা মোটা এবং এটা নিয়া তারা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ। তাই আজ ভেবেছি এই বিষয়টা নিয়া লিখব এবং প্রকৃত সত্যটা অবিবাহিত তরুণ সমাজের কাছে তুলে ধরব যেন তার ভবিষ্যতে এটা নিয়া বিভ্রান্ত না হয়। আপনার মনে এপর্যন্ত যত প্রকার বদ্ধমূল ধারণা তৈরী হয়েছে সবগুলিকেই মন থেকে মুছে ফেলুন এবং নিচের বিষয় গুলি মনোযোগ দিয়া স্মরণ রাখার চেষ্টা করুন।
পেনিস বা পুরুষাঙ্গের গোঁড়া চিকন আগা মোটা বা বাঁকা সমস্যা

পুরুষাঙ্গ বিষয়ক তথ্যাদি

  • উত্তেজিত অবস্থায় পুরুষ লিঙ্গের গড় দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে 4.7 থেকে 6.3 ইঞ্চি। অনেকের মতে পেনিসের গড় দৈর্ঘ্য ৫.১-৫.৯ ইঞ্চি। 
  • তবে আপনার পেনিস যদি লম্বার সর্বনিম্ন 4 (চার) ইঞ্চিও হয়ে থাকে তাহলেও আপনার স্ত্রীকে তৃপ্তি দিতে আপনার কোনো সমস্যা হবে না। অনেকে আবার এও বলে থাকেন স্ত্রীকে অরগাজম দিতে মাত্র ৩ ইঞ্চি লম্বা পেনিস হলেই যথেষ্ট। 
  • বড় পেনিস মানেই বেশি মজা, কথাটা ঠিক নয় । আপনার ডিউরেশন কত সেটাই আসল । স্বাভাবিক টাইম ৭-১০ মিনিট। 
  • পেনিস কখনই একেবারে সোজা হয়না । একটু বাকা থাকেই । 
  • পেনিসের গোঁড়া চিকন আগা মোটা এটা কোন সমস্যা নয় । অপপ্রচারের ফলে সবারই এটা একটা ভুল ধারনা হয়ে গেছে । 
  • কোন যাদুকরী তেল বা মালিশ পেনিস তেমন বড় করতে সক্ষম নয় । এগুলা ভুয়া । তবে সতেজ রাখার বা করার জন্য মালিশ বা ম্যাসেজ ব্যবহার করতে পারেন আমরা যেমন শরীরের ত্বক সতেজ রাখার জন্য সরিষার তেল বা অনান্য প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। 
  • বেশি বড় পেনিস হলে মেয়েরা মজা পাওয়ার বদলে ব্যাথা পায় । এমনকি সেটা যৌন আতঙ্কেও রুপ নিতে পারে। 
  • ক্ষুদ্র পেনিস বলতে ২.৭৬ ইঞ্চির চেয়ে ছোট পেনিস বুঝায় । সেক্ষেত্রে ডাক্তার দেখাতে হবে। 
  • গোঁড়া চিকন আগা মোটা বা বাঁকা পেনিস যৌনমিলনে কোন সমস্যার সৃষ্টি করেনা । 
  • পেনিসটাকে নিয়ন্ত্রণ করুন। একমাত্র স্ত্রী ছাড়া আর কোথাও ব্যবহার করবেন না। 
  • স্ত্রী ছাড়াই পেনিস দাঁড়াইয়া যায় এমন কোনো কাজ যেমন: বেগানা নারীর দিকে তাকানো, অশ্লীল সাহিত্য পড়া, কম্পিউটার বা মোবাইলে খারাপ কিছু দেখা থেকে বিরত থাকুন। 
  • ৪০ দিনের মধ্য পুরুষাঙ্গের গোড়ার চুল কাটুন। 
  • আপনার যৌন স্বাস্থ্য এর দিকে নজর দিন। এটাও আপনার শরীরেরই অংশ। 
  • যৌন সমস্যার ব্যাপারে ভুল করেও কখনো অবহেলা করবেন না। যে কোনো যৌন সমস্যায় কোনো প্রকার সংকোচ না করে তাত্ক্ষণিক ভাবে আপনার হোমিওপ্যাথের পরামর্শ নিন। কারণ অল্প দিনের হোমিও চিকিত্সাতেই আপনার সকল প্রকার যৌন সমস্যা চিরতরে নির্মূল হয়ে যাবে। তার জন্য ক্ষতিকর হার্বালের মত বার বার আপনাকে ঔষধ খেয়ে যেতে হবে না। 
  • সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন এবং সুখী আনন্দময় যৌন জীবন উপভোগ করুন। ধন্যবাদ।
বিস্তারিত

রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০১৩

নারীর মধ্য বয়সের সমস্যা - মেনোপজ

আপন গতিতে জীবন বয়ে চলে। জীবনের নিজস্ব ধারায় মানুষ শৈশব থেকে কৈশোর, কৈশোর থেকে যৌবন এবং যৌবন থেকে মধ্যবয়স এবং মধ্যবয়স থেকে বাধর্ক্যের দিগন্ত রেখা ছুয়ে যেতে হয়। জীবনের এই প্রতিটি প্রান্তে এসে দেহে মনে নানা পরিবর্তন দেখা দেয়।

তবে এ সব পরিবর্তন নারী এবং পুরুষের একই ধরণের হয় না। বিশেষ করে মধ্য বয়স অতিত্রুম করার পর একজন নারী বিশেষ কিছু শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে পড়েন। যাকে মেনোপজ, রজঃনিবৃত্তি বা ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়া বলে।
নারীর মধ্য বয়সের সমস্যা - মেনোপজ
মধ্য বয়স অতিক্রান্ত হওয়ার সময় নারী দেহে কিছু কিছু পরিবর্তন দেখা দিতে শুরু করে। মেনোপজ বা রজঃনিবৃত্তি বা ঋতুস্রাব বন্ধের আগে এসব পরিবর্তন দেখা দিতে থাকে। এ সব পরিবর্তন সাধারণ ভাবে ৪৫এর পর নারীরা অনুভব করতে থাকেন। সাধারণত গড়ে ৫১ বছর বয়সে মেনোপজ হয়ে থাকে, তবে কোনো কোনো নারীর ক্ষেত্রে তা ৪০ বছরে আবার কারো ক্ষেত্রে ৫০ বছর বয়সে তা ঘটতে পারে। ধুমপায়ী নারীদের ক্ষেত্রে মেনোপজ অল্প বয়সেই দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে বিশেষ কোন রোগের কারণে জরায়ু কেটে ফেলা হলে নারীর ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাবে।

তবে অপারেশনের সময় যদি ওভারি ফেলে দেয়া না হয় তবে মেনোপজের উপসর্গগুলো দেখা দেবে না। এ ছাড়া কোনো বিশেষ কারণে যদি কোনো নারীর জরায়ু এবং ওভারি দুটোই ফেলে দেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে রোগিনীর বয়স যাই হোক না কেন, মেনোপজের উপসর্গ প্রকাশ পেতে থাকবে। আর এমনটি হওয়ার কারণ হলো নারী দেহে ইষ্ট্রোজেন ও প্রজেষ্টেরন হরমোন তৈরীর কাজটি করে ওভারিই।

কাজেই ওভারি যদি না থাকে এ হরমোনও তৈরি হবে না এবং পরিণামে মেনোপজ দেখা দেবে। মেনোপজের ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক ডা: মাহেনাজ আফরোজ বলেন, বয়সের কারণে মেনোপজ হয় বলে এটাকে প্রতিহত করা কারো পক্ষে কোনো ভাবেই সম্ভব নয়।

তাই মধ্য বয়স অতিক্রম করার সময় পরবর্তী অনিবার্য পরিবর্তনের জন্য একজন নারীর দেহ ও মনকে প্রস্তুত রাখা উচিত। সাধারণভাবে শিক্ষিত নারীরা এ ব্যাপারে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকেন। আর মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকলেও এই পরিবর্তনকে সহজে মেনে নেয়া যাবে। মেনোপজের আগে ভাগে নারীদের মনেও কিছু পরিবর্তন ঘটে। এর মধ্যে খানিকটা ভুলো মনো হয়ে পড়া এবং আবেগ প্রবণ হয়ে ওঠাই হলো উল্লেখযোগ্য।

মেনোপজ প্রতিহত করার কথা অনেকেই বলে থাকেন। প্রথমেই এ ব্যাপারে পরিস্কার ভাবে বলা হয়েছে বয়সজনিত এই বিষয়টা প্রতিহত করা একেবারেই সম্ভব না। এরপরও অনেকে নানা ধরণের ওষুধের দিকে ঝুকে থাকেন।

এ প্রসংগে ডা. মাহেনাজ আফরোজ জানালেন, এ পরিবর্তন আসবেই। এটাকে প্রতিহত বা এই পরিবর্তনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো উপায় নেই। তবে পরিবর্তন যেনো দেরিতে আসে সে জিনিসটা করা যেতে পারে। কিন্তু এ পরিবর্তন বিলম্ব করার জন্য যে সব ওষুধ ব্যবহার করা হয় বা যে সব পদক্ষেপ নেয়া হয় কোনো সু চিকিৎসকই তা সমর্থন করবেন না। তবে পরিবর্তন আসার আগে যদি কোনো উপসর্গের তীব্রতা বৃদ্ধি পায় তবে সে ক্ষেত্রে রোগী ভেদে চিকিৎসা করা যেতে পারে। মেনোপজের আগে ভাগে যে সব লক্ষণ দেখা যায় তা নিয়ে আলোচনার শুরুতেই একবার আভাস দেয়া হয়েছে।

এবার এ সব উপসর্গ নিয়ে বিস্তারিত বললেন ডা.মাহেনাজ আফরোজ। তিনি জানালেন, বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা, হট ফ্ল্যাশ বা নাকে বা মুখে হঠাৎ গরম ভাপ লাগা মনে হওয়া, এমন সব উপসর্গ দেখা দিতে পারে। একে মেনোপজের প্রথম বা প্রধান লক্ষণও বলা যেতে পারে। এটি দিনে দুই-তিনবার বা রাতে যেকোনো সময় হতে পারে, বা এ কারণে একজন নারী ঘুমের মধ্যে প্রচণ্ড ভাবে ঘেমে উঠতে পারেন। এ ছাড়া দেহের পরিবর্তনের এ সময়ে বিষন্নতা, অকারণে উত্তেজনা, নার্ভাসনেস, রুক্ষ ও খিটখিটে মেজাজ, অমনোযোগিতা, মাথা ধরা ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। খাবারে প্রচন্ড অরুচি, অনেক সময় বদহজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

মেনোপজের প্রথম বছর গুলোতে যে সব সংকট দেখা দিতে পারে তার একটি হলো হট ফ্লাশ বা গা গরম হয়ে ওঠা। শরীরের উপরের অংশ অর্থাৎ মুখ এবং গলায় প্রচন্ড গরম অনুভূত হতে পারে এবং ঘাম দেখা দিতে পারে । কখনো কখনো হাত গলা বুক ও পিঠে লাল দাগ দেখা দিতে পারে। প্রচন্ড গরমের পর পরই শীতে শরীর কেঁপে কেঁপে উঠতে পারে। এ সমস্যা কখনো কখনো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। হট ফ্লাশের এ অবস্থাকে নাইট সোয়েট বলা হয়।

সাধারণভাবে হট ফ্লাশ ৩০ সেকেন্ড থেকে ১০ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। মেনোপজের সময়ে খাদ্য তালিকাতে কোন পরিবর্তন না করলেও নারীদের ওজন বাড়তে দেখা যায়৷ মেনোপজে হয়েছে বা মেনোপজের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন এমন সকল মহিলার ক্ষেত্রে এই সমস্যা দেখা যায়৷ আর এই ওজন বৃদ্ধির কারণে প্রায় সব মহিলাই চিন্তায় থাকেন। কিন্তু এমন কেন হয় তা আমাদের মধ্যে বেশীর ভাগ মহিলারই জানা নেই৷

আসলে মেনোপজের সময় থেকে নারীদের মধ্যে হঠাৎ মনোভাবের পরিবর্তন ঘটতে থাকে তার ফলে নিয়মিত ব্যায়াম চর্চার ইচ্ছা কমতে থাকে৷ আর ব্যায়ামে অনীহার কারণে মেনোপজের সময়ে মহিলাদের ওজন বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠে। বেশীর ভাগ মহিলাই মেনোপজের সময়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন তাদের ওজন বৃদ্ধির সমস্যা নিয়ে কারণ তাদের ব্যায়াম করার ইচ্ছা হ্রাস পায় অন্যদিকে সে অনুযায়ী তাদের খাদ্য তালিকাতে কোন পরিবর্তন ঘটে না। ফলে যা হওয়ার তাই হয়, অর্থাৎ ওজন বাড়তে থাকে। মেনোপজের আগে নারী নিজ উদ্যোগ নিয়ে কাজে আগ্রহী হতেন বা যে পরিমাণ কাজ তারা করতেন এ সময়ে তার প্রায় অর্ধেক পরিমাণ কাজ করেন ৷ বরং বলা যায় তাদের একরকম আলসেমীতে পেয়ে বসে।

কাজের পরিমাণ কমানোর ফলে তাদের কায়িক পরিশ্রম কমে যায় এবং খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ না কমানোর ফলে তাদের ওজন ক্রমশঃ বাড়তে থাকে৷ এছাড়াও মেনোপজ কালীন সময়ে নারীদেহে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ কমতে থাকে এবং হরমোনের এই ঘাটতি তাদের মোটা হওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে উঠে। আর এর কারণ হলো এই হরমোন নারীদের সঠিক ওজন বজায় রাখতে সাহায্য করে৷ মেনোপজের পর পরই নারীর সকল দৈহিক সমস্যা প্রকাশ পায় না। তবে এ সময় স্বামীর সাথে থাকতে গেলে বেদনা অনুভূত হতে পারে।

এ ছাড়া বয়স কিছু বাড়ার সাথে সাথে তার মধ্যে দৈহিক সমস্যা দেখা দিতে থাকে। ইষ্ট্রোজেন হ্রাস পাওয়ার ফলে নারীর ঘন ঘন ইনফেকশন দেখা দিতে পারে। মূত্রনালীর ইনফেকশনের ফলে বেশিক্ষণ প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা, ব্যায়াম, হাচি, কাশি, দৌড়ানো অথবা জোরে হাসির সময় ফোটা ফোটা প্রস্রাব গড়িয়ে পড়ার মত উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

এ সময় নারী আবেগ প্রবণ হয়ে পড়তে পারেন। কিংবা ভুলো মনা হয়ে পড়তে পারেন সে কথা আগেই বলা হয়েছে। জয়েন্ট বা দেহের সন্ধি ও মাংশপেশি শক্ত হয়ে উঠতে পারে এবং সেগুলোতে ব্যথা অনুভূত হতে পারে। নারী দেহের মাংসপেশী হ্রাস পেয়ে সেখানে মেদ জমতে পারে। এছাড়াও মেনোপজের পর কোন পূর্ব লক্ষণ ছাড়াই দুটি খুব সাধারণ কিন্তু জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে, তার একটি হলো অষ্টিওপোরোসিস (Osteoporosis) পুরোনো হাড় ক্ষয় হয়ে নতুন হাড় তৈরী হওয়া মানব-মানবীর শরীরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় ভুমিকা রয়েছে ইষ্ট্রোজেন নামক হরমোনের।

কাজেই দেহে ইষ্ট্রোজেন এর অভাবে ধীরে ধীরে হাড়গুলো দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যায়। চিকিৎসা বিদ্যার ভাষায় এই অবস্থার নাম হলো অষ্টিওপোরোসিস। এ ছাড়া ইষ্ট্রোজেন ঘাটতি অথবা বয়স বেড়ে যাবার কারণে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই নিয়মিত রক্তচাপসহ শরীরের কোলেষ্টেরল এর পরিমাণ পরীক্ষা করা দরকার। মেনোপজ কোনো রোগ নয় দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তাই একে মেনে নেওয়ার প্রস্তুতি থাকতে হবে। এ সময় শরীরের প্রতি আগের চেয়ে একটু বেশি যত্ন নিতে হবে। সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।

নিয়মিত কম চর্বি যুক্ত, বেশি প্রোটিন ও আশযুক্ত খাবার খেতে হবে। বেশি পরিমাণে ফলমুল, শাকসবজি, শষ্য ও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ গ্রহণ করতে হবে এবং ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাদ্য খেতে হবে ও শরীরের স্বাভাবিক ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
বিস্তারিত