সমগ্র বিশ্বে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের কদর দিন দিন বাড়ছে। এর প্রধান কারণ হলো এলোপ্যাথিক চিকিৎসা যে ক্রনিক ডিজিস এবং দুরারোগ্য ব্যাধিগুলি পুরুপুরি সারাতে পারে না তার অধিকাংশগুলিই হোমিও চিকিৎসায় দূর করা সম্ভব হচ্ছে। যদিও অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতিতে আয়ুর্বেদ, ইউনানীসহ আরো কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। আপনার এও জানা দরকার পৃথিবীতে শুধু এলোপ্যাথিক ঔষধই একমাত্র চিকিৎসার জন্য ঔধষ নয়। রয়েছে আরো বহু অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতি এবং অল্টারনেটিভ মেডিসিন। কিন্তু পুঁজিবাদী কোম্পানিগুলি একমাত্র এলোপ্যাথিক ঔষধ বিক্রি করেই মোটা অংকের টাকা তাদের পকেটে ঢুকাতে পারে বলে অন্য সবগুলি থেকে মানুষকে তারা প্রচার প্রচারণা করে ফিরিয়ে রাখে। পৃথিবীতে আরো কি কি অল্টারনেটিভ মেডিসিন আছে তা একবার দেখে নিন
এখান থেকে >>>। জানি এটা দেখার পর আপনার চিন্তা চেতনায় একটা নাড়া দিবে! তাহলে এতো মানুষ মরছে কেন দুরারোগ্য রোগে ? জি স্যার, এতে যারা আপনাকে শোষণ করে চলেছে তাদের যেমন দোষ আছে সাথে সাথে আপনারও দোষ রয়েছে। কারণ এক্ষেত্রে যারা বেঁচে যাচ্ছেন তারা নিজের প্রজ্ঞা এবং জ্ঞানের কারণে যেকোনো সমস্যার জন্য এর সঠিক সমাধানের উপায়টি খুঁজে বের করতে পারেন।
পৃথিবীতে আল্লাহ রোগ দিয়েছেন এবং সাথে তার আরোগ্যের উপায়ও দিয়েছেন। আপনি জ্ঞান অর্জন করেননি, আপনার সমস্যার সমাধান নিয়ে পড়াশোনা করেননি, রোগে আক্রান্ত হলে বা সমস্যায় পড়লে সমস্যাটি সমাধান করার সঠিক উপায় কি সেটা খুঁজে বের করেন নি - এটা আপনার ব্যর্থতা। তাই শেষ বিচারে দিন কেউ সৃষ্টিকর্তা আল্লাহকে দোষ দিতে পারবে না। কেউ বলতে পারবে না যে - তুমি শধু আমায় সমস্যাই দিয়েছ কিন্তু এর সমাধানের উপায় দাও নি। আপনার রোগ হল আর আপনি শুধু এলোপ্যাথির পেছনে দৌড়াচ্ছেন।
অথচ এই এলোপ্যাথি ৩০-৪০% এর বেশি ক্রনিক রোগের স্থায়ী এবং পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন কোন কার্যকর ট্রিটমেন্ট দিতে পারে না। আপনাকে অনেক ক্রনিক রোগের জন্যই সারা জীবন ঔষধ খাওয়াবে এলোপ্যাথি ডাক্তাররা আর ঔষধ কোম্পানি থেকে ডাক্তাররা কমিশন খেয়ে যাবে, মাঝে থেকে আপনার পটেকের টাকা মাসের পর মাস ধরে তাদের পকেটে যাবে - এটাই পুঁজিবাদীদের চালাকি। আর এই কারণেই এটি সর্বাধিক সীকৃত।
অথচ একটু খুঁজে দেখলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার রোগের স্থায়ী সমাধান রয়েছে অন্য একটি অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতিতে। তবে এটাও সত্য যে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এলোপ্যাথি বেশ কার্যকর। এই যেমন সার্জারি বা অপারেশনের সময় এলোপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ এবং মরণাপন্ন যেকোন রোগীকে ইনস্ট্যান্ট সাপোর্ট দিতে এলোপ্যাথিক ঔষধ বেশি কার্যকর, যদিও এটি সব ক্ষেত্রে নয়। কিন্তু ক্রনিক ডিজিস সারানোর ক্ষেত্রেও এলোপ্যাথি খুব বেশি সাপোর্ট দিতে পারে না, এক্ষেত্রে সারা জীবন এলোপ্যাথিক ঔষধ খেয়ে যেতে হয়। কিন্তু সেই একই ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি ৯০% সাপোর্ট দিবে আপনাকে, আর কয়েক মাসের চিকিৎসায় ভালো হয়ে যাবেন অর্থাৎ সারা জীবন ঔষধ খেয়ে যেতে হচ্ছে না আপনাকে। এর থেকে আর কি ভালো সুফল হতে পারে।
একটা বিষয় সকলেরই জানা উচিত সব চিকিৎসা শাস্ত্রেরই কদর রয়েছে কারণ একটি মাত্র চিকিৎসা শাস্ত্র দিয়ে সব রোগের নির্মূলকারী চিকিৎসা সম্ভব নয়। যদিও এলোপ্যাথিক বহুজাতিক কোম্পানিগুলি তাদের এক চেটিয়া ব্যাবসা ধরে রাখার জন্য অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিগুলির ক্রমাগত দুর্নাম করেই চলেছে। অথচ স্বয়ং এলোপ্যাথিই ৩০-৪০% এর বেশি রোগের কার্যকর এবং পুরুপুরি নির্মূলকারী ট্রিটমেন্ট দিতে পারে না। বাকি রোগগুলির জন্য এলোপ্যাথিক ডাক্তারগণ বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানি থেকে কমিশন খাবে সাথে সাথে আপনাকে সেই কোম্পানির ঔষধ সারা জীবনই খাওয়াবে আর আপনার পকেটের টাকা সারা জীবন ধরেই তাদের পকেটে ঢুকাবে, হ্যা এটাই এখন আইন, এটাই এখনকার বাস্তবতা। আর সাথে এলোপ্যাথিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তো ফ্রিতেই পাচ্ছেন। ভুলে যাবেন না সাধারণ প্যারাসিটাল ট্যাবলেটেরও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। বিশ্বাস না হলে প্যারাসিটালের প্যাকেটের সাথে যে কাগজ দেয় সেটি একবার মনোযোগ দিয়ে পড়ে দেখবেন। মাথা আপনার নষ্ট হয়ে যাবে। আপনার এটিও জানা উচিত প্রতিটি এলোপ্যাথিক ঔষধই পরীক্ষা করা হয় প্রথমে ইতর শ্রেণীর প্রাণীর উপর এই যেমন - ইঁদুর, শূকর ইত্যাদি। এর মাধ্যমেই এলোপ্যাথিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লিপিবদ্ধ করা হয়। আর অন্যদিকে প্রতিটি হোমিওপ্যাথিক ঔষধ পরীক্ষা করা হয়েছে সরাসরি একজন একেবারে স্বাস্থবান সুস্থ মানুষের উপর প্রয়োগ করে। তাই তো হোমিওপ্যাথি এতো কার্যকর আর হোমিও ডাক্তারগণ ও পার্শপ্রতিক্রিয়াহীন চিকিৎসা দিতে পারেন।
এবার আসুন অল্টারনেটিভ চিকিৎসা শাস্ত্রের দিকটা নিয়ে আরেকটু ভিতরে ঢুকি। অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতির একটি হোমিওপ্যাথি দিয়েই ৯০% রোগের স্থায়ী চিকিৎসা সম্ভব। তাও আপনাকে ক্রনিক রোগের ক্ষত্রে হয়তো ৬-৮ মাসের মতো ঔষধ খাওয়া লাগতে পারে বা বড়জোর এর চেয়ে কয়েক মাস বেশি সময় লাগতে পারে। যেখানে এলোপ্যাথিতে সেই একই রোগের কোন চিকিৎসা পর্যন্ত নেই। এলোপ্যাথিক ডাক্তার যখন ঔষধ প্রযোগ করে কাজ করাতে পারেন না তখন সেটা সার্জারিতে ট্রান্সফার করেন এবং অপারেশন করে আপনার কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে অনেক ক্ষেত্রেই বলে দিবে তিন মাসের বেশি বাঁচবেন না (যেমন মহিলাদের জরায়ুর ক্যান্সার)। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক ডাক্তাররা সেই জটিল রোগকেই সারিয়ে তুলছে স্থায়ীভাবে। এর প্রমান আপনার আশেপাশেই পাবেন ভুরি ভুরি। তাই এটি নিয়ে আর বিস্তারিত বললাম না।
আমার কথাগুলি শুনে অবাক হলেন অনেকেই - তাই না। আসুন একটা উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি বিশ্লেষণ করি। ধরুন, একজনের একটা কিডনি ড্যামেজ বা নষ্ট হয়ে গেছে। এলোপ্যাথিক ডাক্তারের কাছে গেলেন তারা আপনাকে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করাবে অর্থাৎ আপনারটা ফেলে দিয়ে আরেকটি লাগবে। এই অপারেশনের জন্য টাকার পরিমানটা কত হতে পারে আর কি পরিমান দুর্ভোগ পোহাতে হতে পারে একবার ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে দেখুন। তো কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করলেন - স্যার, এখানেই শেষ হয়। সমস্যার মাত্র শুরু। আপনার বাড়িতে একজন অপরিচিত লোক আসলে আপনি যেমন তাকে সাথে সাথেই আপন করেন নিবেন না সেই রকম, যখন আরেকজনের কিডনি আপনার শরীরে বসানো হবে আপনার শরীরও তাকে আপন করে নিবে না। আপনার শরীরের সাথে তাকে খাপ খাওয়ানোর জন্য এলোপ্যাথিক ডাক্তাররা আপনাকে ক্রমাগত ঔষধ খাওয়াতে থাকবে। এবার টাকার অংকটা আরেকবার যোগবিয়োগ করে দেখুন।
এবার আসুন পৃথিবার সর্বশ্রেষ্ঠ অল্টারনেটিভ চিকিৎসা পদ্ধতি হোমিপ্যাথিতে এর চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করি। এলোপ্যাথি ডাক্তাররা আপনার নিজের কিডনিটিই ফেলে দিলো। আর হোমিও ডাক্তাররা আপনার সেই ড্যামেজ বা নষ্ট কিডনিটিই ঠিক করে দিবে। এর জন্য হয়তো অভিজ্ঞ কোন হোমিও চিকিৎসক আপনাকে সব মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি হলে ৮/১০ মাস ঔষধ খাওয়াবে। আর এই চিকিৎসাতেই আপনার সেই ড্যামেজ বা নষ্ট কিডনিটি নতুন করে আপনার সচল হয়ে উঠবে। এর জন্য আপনাকে বাড়িঘর, জায়গা সম্পত্তি বিক্রি করে অপারেশন করতে হচ্ছে না, ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ভুগতে হচ্ছে না আর আপনাকে সারা জীবন ঔষধও খেয়ে যেতে হচ্ছে না ।
আজকাল শিক্ষিত অনেক লোককেই দেখা যায় তাদের শিক্ষা দীক্ষা ফলাও করার জন্য কোন রোগের জন্য কোথায় যাবে হরহামেশাই পরামর্শ দিচ্ছেন মানুষকে। এই যেমন
- আপনার স্কিন ডিজিস (কিছু সেক্সের রোগের ক্ষেত্রেও) - আরে ভাই ভাল একজন ডার্মাটোলজিস্ট দেখান।
- আপনার কিডনির সমস্যা - আরে ভাই ভাল একজন নেফ্রোলজিস্ট দেখান।
- আপনার হেপাটাইটিসের সমস্যা - আরে ভাই ভাল একজন হেপাটোলজিস্ট দেখান।
- আপনার পেটে সমস্যা - আরে ভাই ভাল একজন গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট দেখান।
- ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি
এবার আসুন আমার শিক্ষিত ভাই, নতুন করে আজকে কিছু বিষয় শিখে নিন। আরেকজনের উপকার না করতে পারলেও অন্তত নিজের জীবনটা ভালো রাখতে পারবেন। আপনি হয়তো জানেন না -
- এলোপ্যাথিক নেফ্রোলজিস্ট এর হাতে কিডনি সমস্যা নির্মূলের জন্য পর্যাপ্ত মেডিসিন নেই। কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল ভাল দিতে পারলেও ক্রনিক ক্ষেত্রে ভালো চিকিৎসা নেই। আর চিকিৎসাও অনেক ব্যয়বহুল।
- এলোপ্যাথিক ডার্মাটোলজিস্ট এর হাতে অনেক চর্ম রোগ সারানোর মতো পর্যাপ্ত মেডিসিন নেই। কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল ভাল দিতে পারলেও ক্রনিক ক্ষেত্রে ভালো চিকিৎসা নেই। জেনে রাখা ভালো ৩০% এলার্জির কারণ কি এটাই এখন পর্যন্ত এলোপ্যাথি আবিষ্কার করতে পারেনি - ট্রিটমেন্ট দিবে তো দূরের কথা। এ জন্য দেখবেন এলার্জির ক্ষেত্রে এলোপ্যাথি ঔষধ খেলে আপনি কিছু দিন ভালো থাকবেন আর বাদ দিলে কিছু দিন পর আবার রোগের শুরু। অর্থাৎ কার্যকর চিকিৎসা নেই।
- এলোপ্যাথিক হেপাটোলজিস্ট এর হাতে হেপাটাইটিসের সমস্যা নির্মূলের জন্য খুব বেশি মেডিসিন নেই। কিছু ক্ষেত্রে ফলাফল ভাল দিতে পারলেও ক্রনিক ক্ষেত্রে ভালো চিকিৎসা নেই।
- এলোপ্যাথিক গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট এর হাতে পেটের সমস্যা নির্মূলের জন্য কার্যকর মেডিসিন নেই। সাধারণ একজন গ্যাসের রোগীকেই তারা সারা জীবন ভর ঔষধ খাওয়ায়। বাকিগুলির কথা নাইবা বললাম।
- মহিলাদের সমস্যাগুলিতে এলোপ্যাথিক তেমন ভালো কোন চিকিৎসা নেই বললেই চলে।
- পুরুষের যৌন সংক্রান্ত sexually transmitted diseases (STD) ছাড়া দ্রুত বীর্যপাত (Premature ejaculation (PE)), Erectile dysfunction (ED), লিঙ্গ উত্থান সমস্যা, যৌন অক্ষমতায় বলতে গেলে এলোপ্যাথিতে ভালো এবং স্থায়ী কোন চিকিৎসাই নেই। তাই তারা এটাকে মানুষিক সমস্যা বলে চালিয়ে দেয়। কিন্তু নিজের সমস্যা হলে গোপনে গোপনে ঠিকই হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের কাছে যায়। এটাই বাস্তবতা।
এই সব সেকশনের এলোপ্যাথিক ডাক্তারগণ শরীরবিদ্যায় বেশ পারদর্শি কিন্তু রোগ আরোগ্যের ক্ষেত্রে তাদের হাতে পর্যাপ্ত ঔষধ নেই। যার কারণে এলোপ্যাথিক ডাক্তারগণ যেখানে রোগের কারণ খুঁজে খুঁজে হয়রান সেইখানে যেকোন অভিজ্ঞ একজন হোমিও ডাক্তার আপনার চারিত্রিক, মানুষিক আর রোগের লক্ষণ দেখেই তার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে শধু মাত্র ঔষধ প্রয়োগ করেই আপনাকে সুস্থ করে তুলছে। কারণ হোমিওপ্যাথিতে প্রতিটি রোগের জন্য রয়েছে অজস্র ঔষধ। তবে এর জন্য দরকার হোমিও ডাক্তারের ব্যাপক পড়াশোনা আর বাস্তব অভিজ্ঞতা।
কিন্তু আমাদের দেশে কিছু হোমিও ডাক্তারের বোকামির জন্য অনেক সময় পুরু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসারই বদনাম হচ্ছে। আমি যে এলাকায় থাকি সেখানে কিছু দিন হলো এক মহিলা চিকিৎসক সাজানো গুছানো চেম্বার খুলে বসেছেন। তার ডিগ্রিগুলি দেখুন -
০১. ডিএইচএমএস (অর্থাৎ ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স)। এটি আপনি টাকা দিয়ে কিনতে পারবেন না। ডাক্তার হতে চাইলে এই খানে আপনাকে ৪ বছর সময় দিতেই হবে। একজন প্রফেশনাল হোমিও চিকিৎসকের ডিপ্লোমা বা স্নাতক যেকোন ডিগ্রি থাকলেই ডাক্তারি করতে পারবেন তাতে সমস্যা নেই। তাছাড়া একথা সত্য যে - এ দেশের বড় বড় হোমিও ডাক্তারের ৯৮% ই ডিএইচএমএস অর্থাৎ ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী, যদিও পরে অনেকেই স্নাতক এবং অনেকে এমডিও করে নিয়েছেন।
০২. পিডিটি (১ বছর মেয়াদি হোমিও মেডিসিনের উপর একটা কোর্স), এটা বেশ ভালো একটি বিষয় যদিও এটি মেডিকেল কলেজে করানো হচ্ছে কিন্তু হোমিও বোর্ড স্বীকৃত নয়। তবে প্রোফেসনাল হোমিও চিকিৎসকদের মেডিসিনের উপর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য এটা করা ভালো।
০৩. এমডি (ইন্ডিয়া থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত - ঐ মহিলা ডাক্তারের সাইন বোর্ডে লেখা আছে)
আসুন এই ডিগ্রিটি নিয়ে আগে আলোচনা করি। এটি বিশ্ববিদ্যালয়েও করানো হয় এবং এটিও কিছুটা দীর্ঘ মেয়াদি উচ্চতর একটি কোর্স। যেখানে নিয়মিত পড়াশোনাও করতে হবে আপনাকে। আর এটি করার নম্বর ওয়ান শর্ত হলো এর পূর্বে স্নাতক ডিগ্রি অর্থাৎ বিএইচএমএস ডিগ্রি লাগবে।
লিংকটিতে ক্লিক করুন >>>
কিন্তু আমাদের এলাকার ঐ মহিলা ডাক্তারের ইন্ডিয়া থেকে এই ডিগ্রি করতে খরচ পড়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা তাও আবার তাকে সম্ভবতো ১ বারের বেশি সেখানে যেতে হয়নি। তিনি ভেতরে প্রিন্ট করে বিশাল এক সনদপত্র ঝুলিয়ে রেখেছেন। অথচ তিনি স্নাতক অর্থাৎ বিএইচএমএস করেননি। তিনি পাবলিককে এতটাই বোকা ভেবেছিলেন যে - নিজেই ধরা খেয়ে গেলেন। ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারী লোক, নামের সাথে এমডি ডিগ্রি ঝুলিয়ে রেখেছেন। আর সত্যতা প্রমান করার জন্য ইন্ডিয়ার শিয়ালদহের একটি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্ট করা কাগজপত্র বাঁধাই করে ঝুলিয়ে রেখেছেন। তিনি হয়তো নিজেও জানেন না হোমিওতে এমডি করতে হলে বিএইচএমএস বাধ্যতামূলক থাকতে হবে যেটি তার নেই। কারণ এক্ষেত্রে ডিপ্লোমার পর পিডিটি কোর্স করে এমডি করা কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ই এলাও করে না।
বলে রাখা ভালো। এটি হল সামান্য হোমিওর বিষয়। বলতে শোনা যায় এমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখান থেকে মাত্র ৩ লক্ষ টাকায় ৩ ঘন্টায় পিএইচডি ডিগ্রিও নাকি কেনা যায়।
আগের বিষয়ে আবার আসি। ঐ মহিলা ডাক্তার নামের আগে প্রভাষকও ব্যাবহার করছেন। তিনি নরসিংদী হোমিও কলেজের প্রভাষক। তো সারা মাস পড়ে থাকেন ঢাকায় ওনার চেম্বারে। বুঝেন ঠেলা। কোথাকার প্রভাষক আর কিসের প্রভাষক !!!??
এই রকম কিছু ডাক্তার রয়েছে যারা ভালো ট্রিটমেন্ট দিতে পারে না। ডিগ্রির বাহার দেখে লোকজন তাদের কাছে যায় আর রোগ ভালো না হলে দোষ দেয় হোমিওপ্যাথিকে। হোমিওপ্যাথির বেলায় ডাক্তারের কোন দোষ নাই। কারণ ঐ যে ডিএইচএমএস, পিডিটি, এমডি, উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইন্ডিয়া থেকে, প্রভাষক.... ইত্যাদি.... ইত্যাদি.... ইত্যাদি। তাই ডাক্তারের দোষ নাই, হোমিওপ্যাথিরই দোষ। অথচ আমার জানা মতে এ দেশের শুধু মাত্র ডিএইচএমএস ডিগ্রিধারী (অর্থাৎ ৪ বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা কোর্স) বহু চিকিৎসক আছেন যারা ঐ বিষেয় স্নাতক আর এমডি করা ডাক্তারের থেকেও অনেক ভালো এবং উন্নত চিকিৎসা দিতে পারেন এবং দিয়ে থাকেন। কারণ যারা এই ডিএইচএমএস কোর্সটি করেন তারা অনেকেই নিজের বাপ্ দাদা থেকেও ব্যাপক ডাক্তারি জ্ঞান লাভ করেন। কারণ হোমিওতে ডাক্তারি পাস্ করা সহজ কিন্তু ডাক্তারি করা ভীষণ কঠিন। আবার দেখা যায় - যারা এই শাস্ত্রে টানা ১০/১২ বছর নিষ্ঠার সাথে শ্রম এবং সময় দেন তারা অনেকেই ভালো ডাক্তার হয়ে উঠেন। জগতে কোন অর্জনই সহজে আসে না। সব কিছুতেই সময় এবং শ্রম দিতে হয়। এই যেমন চার পাঁচ বছর ডাক্তারি পড়ার পর এক বছর ইন্টার্নি করতে হয়। তবে এই একবছরের প্রাকটিস আর ৮/১০ বছরের প্রাকটিস কি কখনো সমান হতে পারে ?
তাই ডিগ্রির বাহার আর প্রভাষক টাইটেল দেখেই হোমিও বা এলোপ্যাথ কোন ডাক্তারদের চেম্বারেই দৌড়াবেন না। আগে খুঁজখবর নিয়ে দেখবেন তার চিকিৎসার সাকসেস রেট কেমন, ডিগ্রি তার যেমনই হোক না কেন ? কারণ হোমিওপ্যাথির ক্ষেত্রে অধিকাংশ প্রভাষকই কলেজে একপ্রকারে পড়াতে পারেন কিন্তু চিকিৎসক হিসেবে ততটা ভালো নয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও হয়। এলোপ্যাথি, হোমিওপ্যাথি, আয়ুর্বেদ চিকিৎসা নেয়ার আগে কিছুটা খুঁজখবর নিলেই আপনি বুঝে যাবেন কখন কোন রোগের জন্য কোন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। কারণ যিনি সুচিকিৎসা দেন তার অবশ্যই একটা সুনাম থাকে।